ব্লগার আর্টিকেলে কিভাবে এসইওর ব্যবহার করবেন (SEO Bangla Tutorial)

seo bangla tutorial

আমরা যারা ব্লগিং করে থাকি অথবা অনেকেই আমরা অনলাইনে আর্টিকেল লেখালেখি নিয়ে কাজ করে থাকি আমরা সকলেই জানি যখন ব্লগ সাইটের জন্য আর্টিকেল লিখতে হয় তখন তাতে On Page Seo করা কতটা জরুরী। ব্লগের জন্য যে কোন আর্টিকেল লেখার সময় আপনারা যদি On Page Seo না করে থাকেন তাহলে আপনাদের সেই আর্টিকেলটি Google Search Engine প্রথম পেইজে কখনোই দেখাবেনা। এতে আপনার ব্লগের জন্য যে কোন Search Engine থেকে ফ্রি ট্রাফিক অথবা ভিজিটর আসার সুযোগ আপনি হারিয়ে ফেলবেন। আজকের এই আর্টিকেলটিতে আমি আপনাদেরকে কিভাবে আপনাদের ব্লগার সাইটের জন্য On Page Seo করতে হয় তা বিস্তারিত ভালোভাবে  তুলে ধরবো।

ব্লগের আর্টিকেল Search Engine Optimization করা বিশেষ করে কিওয়ার্ড এবং এর সঠিক ব্যবহারের ওপর নির্ভর করে। সঠিকভাবে সবকিছু করার পরও যদি আপনি কি ওয়ার্ড সঠিকভাবে ব্যবহার করতে না পারেন তাহলে আপনার আর্টিকেলটি কখনোই গুগলে ভালোভাবে Rank করবে না। তাই আপনাদের ব্লগের আর্টিকেলে সঠিকভাবে Onpage Seo করার আগে আপনাদেরকে বেশ কিছু কথা জেনে নিতে হবে।

SEO কি ?

প্রথমেই জেনে নেয়া যাক SEO কি? SEO হচ্ছে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন হচ্ছে মূলত এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে আমরা আমাদের ব্লগকে অথবা ব্লগের লেখা আর্টিকেলকে সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পেইজে নিয়ে আসতে পারি। এতে করে মানুষের চাহিদা সম্পন্ন কোন কিছু সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ করলে আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগের আর্টিকেলটিতে সে বিষয়বস্তু থাকলে তা সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম রেজাল্টেই চলে আসবে। এতে করে সার্চ ইঞ্জিন থেকে ভিজিটর অথবা ট্রাফিক পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। ধরুন আপনি একটি কালো শার্ট কিনতে চাচ্ছেন। এখন তার জন্য অনলাইনে আপনি গুগল সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ করলেন ব্ল্যাক শার্ট অনলাইন বিডি লিখে। এখন আপনাদের সামনে দারাজ অ্যামাজন বিভিন্ন ওয়েবসাইটের প্রোডাক্ট চলে আসবে। অধিকাংশ মানুষই প্রথম পেজে যে সব প্রোডাক্ট আর্টিকেল চলে আসবে সেইসব লিংকে প্রবেশ করার সম্ভাবনা বেশি।এখন আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে এত ওয়েবসাইটের মধ্যে কোন ওয়েবসাইটের প্রোডাক্ট বা আর্টিকেলকে গুগোল সবার প্রথমে দেখাবে। মূলত সম্পূর্ণ ব্যাপারটা নির্ভর করে এসইওর উপর। তাই যেকোন ব্লগের আর্টিকেলে এসইও করা খুবই জরুরী। যার এসইও যত ভালো হবে গুগল তার আর্টিকেল অথবা ওয়েবসাইটটিকে তো আগে নিয়ে আসবে।

Keywords কি ?

কিওয়ার্ড হচ্ছে আপনি যে বিষয়বস্তুর উপর আর্টিকেল লিখবেন সেই বিষয়বস্তুর সাথে জড়িত কিছু শব্দ। সোজা ভাষায় বললে আপনি যে বিষয় বস্তুর উপর আর্টিকেল লিখেছেন সেই বিষয়বস্তুর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ শব্দই হচ্ছে কিওয়ার্ড। যে কোনো মানুষই গুগলে কোন কিছু সার্চ করার জন্য এই কী-ওয়ার্ড কেই ব্যবহার করে থাকে। মূলত এসইও করে যেকোনো কিওয়ার্ড কে সার্চ ইঞ্জিন এর রেংক করানোর চেষ্টা করতে হয়। যখন কোন কিওয়ার্ড সার্চ ইঞ্জিনের রেঙ্ক করে যাবে তখন ভিজিটর সেই কিওয়ার্ড দিয়ে যদি সার্চ ইঞ্জিনের সার্চ করে তাহলে আপনার আর্টিকেলটি সবার প্রথমে চলে আসবে। আপনি যদি আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগের আর্টিকেলে প্রচুর পরিমাণ ফ্রিতে ভিজিটর অথবা ট্রাফিক পেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে কিওয়ার্ড এর সঠিক ব্যবহার জানতে হবে।

Keyword density কি ?

উপরে আমরা কিওয়ার্ড কিতা খুব ভালোভাবে জেনে নিলাম। তাহলে চলুন এবার আমরা জেনে আসি keyword density কি?
ধরুন আপনি একটি আর্টিকেল লিখতে চান। আর্টিকেলটির বিষয়বস্তু হচ্ছে Seo Bangla Tutorial।এ আর্টিকেলটির লিখার জন্য আপনার সম্ভাব্য কিওয়ার্ড গুলো হচ্ছে “SEO IN BANGLA“, “SEO কিভাবে করবেন” বা “SEO করার নিয়ম“।এখন আপনার বাছাই করা কিওয়ার্ডগুলো আপনার আর্টিকেলে ঠিক কতবার ব্যবহার করবেন কি পরিমাণে ব্যবহার করবেন সেটাই হচ্ছে keyword density।
যেকোনো আর্টিকেল লেখার ক্ষেত্রে আপনারা সর্বোচ্চ ১% থেকে ২% পর্যন্ত কিওয়ার্ড ব্যবহার করতে পারবেন। এর বেশি ব্যবহার করলে গুগল আপনাদের আর্টিকেল বা ওয়েবসাইটটিকে পেনাল্টি করতে পারে। এতে করে আপনার ওয়েবসাইটটি রেংক হারাবে। ফলস্বরূপ আপনার ওয়েবসাইটে ট্রাফিক বা ভিজিটর কমে যাবে। তাই আর্টিকেলে খুব বেশি পরিমাণে কিবোর্ড ব্যবহার করা উচিত নয়। ঠিক যেই জায়গায় আপনার কী-ওয়ার্ডটি ব্যবহার না করলেই নয় সেখানে একমাত্র কিওয়ার্ড ব্যবহার করা উচিত।

ব্লগের আর্টিকেলে SEO র ব্যবহার কিভাবে করবেন ?

আমি আগেই বলেছিলাম আপনি যদি আর্টিকেল লেখার সময় আপনার আর্টিকেলে সঠিকভাবে keyword ব্যবহার করেন তাহলে আপনার আর্টিকেলের এসইও ৭০% হয়ে যাবে। তাহলে আপনারা বুঝতেই পারছেন একটি আর্টিকেল লিখার ক্ষেত্রে keyword ব্যবহার করা কতটা জরুরি। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক কিভাবে সঠিক নিয়মে keyword ব্যবহার করে এসইও করতে হয়।

১. আর্টিকেলের টাইটেল (Title) এ keyword ব্যবহার

আর্টিকেল লেখার সময় সহজ ভাষায় এর টাইটেল লেখাটা খুবই জরুরী। এতে করে আপনি কোন বিষয়বস্তুর উপর আর্টিকেল লিখেছেন তা একনজরে বুঝা যায়। সহজ ভাষায় টাইটেল লিখলে সার্চ ইঞ্জিনের জন্য যেমন সুবিধা হয় তেমনি ভিজিটরদের বুঝতে সুবিধা হয় আপনি কোন বিষয় বস্তুর উপর লক্ষ্য করে আর্টিকেলটি লিখেছন। তাছাড়া আপনার আর্টিকেল এর প্রধান কি keyword টাইটেলে লেখা জরুরি। এতে করে আপনার টাইটেল এর মূল বিষয়বস্তু কি তা সার্চ ইঞ্জিন সহজে বুঝতে পারে।

২. আর্টিকেলের URL Address এ keyword ব্যবহার

যেকোনো আর্টিকেলের এই আপনারা দেখতে পাবেন একটি ইউনিক ইউআরএল রয়েছে। সেই ইউ আর এলটিতে আপনারা আপনাদের আর্টিকেলের প্রধান কী-ওয়ার্ডটি লিখবেন। খেয়াল রাখবেন ইউআরএল এড্রেসটি যেন সংক্ষিপ্ত হয়।

৩. টার্গেট করা keyword এর সঠিক ব্যবহার

আমি আগেই বলেছি আপনারা আপনাদের আর্টিকেল এর প্রধান কী-ওয়ার্ডটি কয়েকবার আপনাদের আর্টিকেল এর মাঝে ব্যবহার করবেন। আর্টিকুলার প্রথম প্যারাগ্রাফ এর মধ্যে আপনারা কেউ এটি একবার ব্যবহার করবেন। আবার শেষ প্যারাগ্রাফ এর মধ্যে কিওটি একবার ব্যবহার করবেন।আর্টিকেল এর মাঝখানে তুই একবার কি পার্টি ব্যবহার করবেন। এতে করে সার্চ ইঞ্জিনের বুঝতে সুবিধা হয় আপনি কোন কিওয়ার্ড কে লক্ষ্য করে আর্টিকেলটি লিখেছেন। যখন ভিজিটর সিকিউরিটি দিয়ে সার্চ ইঞ্জিনের সার্চ করে তখন সার্চ ইঞ্জিন সেই কিওয়ার্ডের আর্টিকেলটিকে সবার প্রথমে দেখায়। এতে করে আর্টিকেল করার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।


৪. আর্টিকেল ১৫০০ শব্দের (words) ভিতরে লিখবেন

অনেকের মাঝে প্রশ্ন তাকে ঠিক কত শব্দের আর্টিকেল আপনাদের লেখা উচিত। যেকোনো আর্টিকেল লেখার ক্ষেত্রে কম করে হলেও 1000 থেকে 2000 শব্দের মধ্যে আর্টিকেলটি লেখা উচিত। পারলে দুই হাজার থেকে তিন হাজার শব্দের মধ্যে আর্টিকেল লেখা ভালো। এতে করে সার্চ ইঞ্জিন আপনার আর্টিকেল টিকে বাড়তি ভ্যালু দেবে। যত বেশি বিস্তারিতভাবে আপনার আর্টিকেলটি লেখা থাকবে আপনার আর্টিকেল এর ভ্যালু তত বাড়বে। এতে করে সার্চ ইঞ্জিনে আপনার আর্টিকেল টিউন করার সম্ভাবনা আরও বেড়ে যাবে।

৫. আর্টিকেলে ছবি (Image) ব্যবহার করবেন।

আপনাদের লেখা আর্টিকেল এর মধ্যে কম করে হলেও একটি ছবি ব্যবহার করবেন। সেই ছবির মধ্যে অবশ্যই একটি “ALT TAG” ব্যবহার করবেন। অনেকেই গুগলের ছবি সার্চ করে থাকেন। আপনার ছবিটি যদি গুগলে ব্যাংক করে তাহলে আপনার ওয়েবসাইট বা আর্টিকেল ভিজিটর আসার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

৬. H tag আর্টিকেলে অবশই ব্যবহার করবেন

আপনারা কি জানেন H ট্যাগ যেমন H1, H2, H3 এবং H4 এস ই ও দিকদিয়ে কতোটা জরুরি ? মনেহয় জানেননা। তাহলে জেনেনিন, নিজের আর্টিকেলে একটি H1 TAG একটি H2 TAG এবং কয়েকটি H3 আর H4 TAG ব্যবহার করা অনেক জরুরি।

৭. Inter linking অবশই করবেন।


ইন্টার লিনকিং হচ্ছে আপনার ওয়েবসাইটের একটি আর্টিকেল এর মধ্যে অন্য আরেকটি আর্টিকেলের লিংক সংযুক্ত করা। যেমন আপনার আর্টিকেল এর বিষয়বস্তু যদি হয়ে থাকে কিভাবে বাংলায় এসইও করা যায়। তাহলে আপনার সেই ওয়েবসাইটে যদি অন্য কোনো আরটিকেল থাকে সেই সংক্রান্ত আপনি সেই আর্টিকেলটির ইউআরএল এই আর্টিকেলে লিংক করে দিতে পারেন।

৮. OutBound linking অবশই করবেন।

আপনার লেখা আর্টিকেলটিতে অবশ্যই 12 টি আউটবাউন্ড লিংক করবেন। ধরুন আপনার আর্টিকেল এর বিষয়বস্তু যদি হয় শীতকালে কিভাবে ত্বক মসৃণ করা যায়। তাহলে উইকিপিডিয়াতে এই সংক্রান্ত কোনো আরটিকেল থাকলে অফিসে আর্টিকেল এর লিংকটি আপনার আর্টিকেল এর যেকোন শব্দের মধ্যে লিংক করে দিতে পারেন।

এগুলো ছাড়াও আর্টিকেল লিখার ক্ষেত্রে আরো অনেক কিছু ব্যবহার করে এসইও করা যায়। সেইসব নিয়ে অন্য কোন দিন আলোচনা করব। আশা করছি আজকের আর্টিকেলটি থেকে আপনারা অনেক উপকৃত হবেন।

Leave a Reply