সার্বিয়া যাওয়ার উপায়, ভিসার জন্য আবেদন ও খরচ

সার্বিয়া ওয়ার্ক পার্মিট ভিসা

দক্ষিণপূর্ব ইউরোপে অবস্থিত বলকান উপদ্বীপের মাঝামাঝি একটি স্বাধীন দেশ সার্বিয়া। বর্তমানে এই সার্বিয়া প্রচুর লোক নিয়োগ দিচ্ছে। ইউরোপের দেশ হওয়ায় এবং আপনি যদি ইউরোপ যেতে চান তাহলে সার্বিয়া যাওয়ার সিদ্ধান্ত আপনার জন্য একটি বড় সুযোগ হতে পারে। ইউরোপের অন্যান্য দেশ গুলোর মতই সার্বিয়া তে বেতন অনেক বেশি হয়ে থাকে। তাই অনেকে ইউরোপের দেশ সার্বিয়া যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করছেন।

ইউরোপের মধ্যে এই সার্বিয়ায় বর্তমানে বিভিন্ন পদে লোক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। সারভিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসার মধ্যে হোটেল রেস্টুরেন্ট, ড্রাইভিং এবং নির্মাণ শ্রমিক কাজের জন্য সুযোগ রয়েছে। আর আপনি সার্বিয়া কিভাবে যাইতে পারবেন কিভাবে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে হয় এবং কত টাকা খরচ হতে পারে আপনি যদি সার্বিয়া যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন তাহলে আজকের পোস্ট টি আপনাকে সাহায্য করবে।

ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সার্বিয়া 

এখন ইউরোপের দেশ সার্বিয়াতে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য লোক নিয়োগ দিচ্ছে। তাই ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় কাজের জন্য ইউরোপের এদেশটিতে চাইলে আপনিও যেতে পারবেন। সে দেশে কাজের জন্য বাংলাদেশ থেকে বেশিরভাগ plumber, ইলেকট্রিশিয়ান, নির্মাণ শ্রমিক, প্লাস্টার ও বিভিন্ন কর্মক্ষম শ্রমিক নিয়োগ দিচ্ছে।

আবার আপনি যদি কোন কাজে দক্ষতার পাশাপাশি বেশি পারদর্শী হয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে ইউরোপে সেই কাজের জন্য নিয়োগ দেওয়া হবে। আপনি যদি ড্রাইভার হন এবং ড্রাইভিং পারদর্শিতা ও ভালো দক্ষতা অর্জন করতে পারেন তাহলে আপনাকে ড্রাইভিং কাজের ভিসায় ইউরোপের দেশ সার্বিয়া নিয়োগ দেওয়া হবে। তবে এক্ষেত্রে আপনাকে ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং লাইসেন্স করে নিতে হবে।

এছাড়াও হোটেলে কাজের জন্য যদি আপনার দক্ষতা ও পারদর্শিত থাকে তাহলে সেই কাজের জন্যেও আপনি চাইলে ইউরোপের দেশ সার্বিয়াতে পাড়ি দিতে পারেন। হোটেল বয় কাজের জন্য বা হোটেলে যে কোনো পদে কাজের জন্য ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে ইউরোপের দেশ সার্বিয়া যেতে পারেন এবং অন্যান্য কাজের তুলনায় এই কাজের পরিশ্রম কম। এছাড়া টুরিস্টদের কাছ থেকে বিভিন্ন রকম টিপসের মাধ্যমে বাড়তি টাকা ইনকাম করা যায়।

সার্বিয়ায় বেতনের ধরন

আমাদের বিদেশ যাত্রা বা প্রবাসী হওয়ার পিছনে একটি কারণে থাকে আর তা হল অর্থ উপার্জন। তাই যেকোনো দেশে যাওয়ার আগে সে দেশে টাকার মান এবং কোন কাজে বেতন কিরকম তা জানার আগ্রহটা সবার আগে।
সার্বিয়া একটি ইউরোপীয় দেশ হওয়ায় অন্যান্য দেশের মতোই এদেশের বেতন বেশি দেওয়া হয়। সার্বিয়া দেশের মুদ্রার নাম সংক্ষেপে RSD বলা হয়। সার্বিয়ায় কাজ করলে আপনি বাংলাদেশি টাকায় কত টাকা বেতন পাবেন তা উল্লেখ করা হলো।

যাদের ড্রাইভিং এর ওপর ভালো দক্ষতা আছে ও ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং লাইসেন্স আছে এবং ড্রাইভিং ভিসায় যারা সার্বিয়া যেতে চান তাদের বেতন ৮০০ ইউরো ধরা হবে। এছাড়া হোটেল বয় এবং রেস্টুরেন্ট ভিসায় যারা যেতে চান তাদের বেতন 700 ইউরো ধরা হবে। যা বাংলা টাকা কনভার্ট করলে আপনি মাসে আশি থেকে এক লক্ষ টাকা বেতন উঠাতে পারবেন। তাছাড়াও আপনি plumber, ইলেকট্রিশিয়ান, টাইলার এবং নির্মাণ শ্রমিকের কাজে সার্বিয়া যান তাহলে ৫০০ থেকে ৫৫০ ইউরো মত বেতন পাবেন। যা বাংলা টাকায় কনভার্ট করলে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকার উপরে আসে।

হোটেল বয় কাজের ভিসায় সিঙ্গাপুরে খরচ ও বেতন কত?চলতি বছরের সিঙ্গাপুরে কাজের চাহিদা -২০২৩ সাল
রোমানিয়ায় ভিসা আবেদন করার পদ্ধতি -ভিসা কিভাবে আবেদন করববাংলাদেশ থেকে মাল্টা যাওয়ার উপায় – মাল্টা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা!

সার্বিয়া ভিসা আবেদন 

সার্বিয়া ভিসা আবেদনের পদ্ধতি এবং কি কি কাগজপত্র লাগতে পারে এবং কিভাবে আবেদন করবেন সেগুলো নিয়ে আলোচনা করব। সার্বিয়াতে এখন কাজের জন্য প্রচুর শ্রমিকের প্রয়োজন তাই তারা জনবল নিয়োগের নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। সার্বিয়া ভিসা আবেদনের জন্য যে সকল কাগজের প্রয়োজন বা ২০২৩ সালে এসে তারা যে সকল কাগজের জন্য আরজি জানিয়েছে সেগুলো বিস্তারিত জানানো হলো।

সার্বিয়া ভিসা আবেদন করার জন্য যে সকল কাগজ এম্বাসিতে জমা দেওয়া হবে তার প্রতিটি কপি সত্যায়িত হতে হবে। পাসপোর্ট এবং জন্ম নিবন্ধনের সাথে পরিপূর্ণ মিল থাকতে হবে। যদি কোন জায়গায় ভুল থাকে তাহলে ওয়ার্ক পারমিট দেওয়া হবে না। এছাড়া যারা সার্বিয়া শুধু ওয়া পারমিট ভিসার জন্য যাবেন তাদের জন্য :

  • আসল পাসপোর্টের স্ক্যান কপি (সমস্ত পৃষ্ঠা চিহ্নিত) 
  • ‌সম্পূর্ণ বায়োডাটা বা সিভি প্রদান করতে হবে। 
  • ‌নতুন তোলা ছবি: 3.5 * 4.5, মুখের 80%
  • ‌পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট। 

এগুলো ছাড়াও ওয়ার্ক পারমিট ভিসার সাথে আপনি আর কি কি পাবেন এবং কয় বছরের ওয়ার্ড পারমিট পাবেন সেগুলো জানানো হলো :

  • ‌অফিশিয়ালি এক বছরের জন্য work permit। 
  • ‌দূতাবাসে নিয়োগের সময়সূচী 
  • ‌পূরণ করা ভিসা আবেদন পত্র 
  • ‌বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে পরামর্শ, ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনার মূল্যায়ন। 
  • ‌নথির গুণগত প্রস্তুতির জন্য সুপারিশ। 
  • ‌চাকরির চুক্তিপত্র।

কাজের ভিসায় সার্বিয়া যেতে খরচ 

সকলের মনে প্রায় একই প্রশ্ন ঘুরপাক খায় আসলে সার্বিয়া কাজের ভিসার জন্য যেতে এবং এমনিতে যেতে কি একি খরচ লাগে, না বেশি লাগে না কম লাগে? প্রথমত এটি ইউরোপের দেশ হয় আপনাকে প্রায় ৭ লক্ষ টাকা খরচ ধরে রাখতে হবে। তবে মুদ্রার মান কম বেশি হওয়ার কারণে খরচও কম বেশি হতে পারে।

বর্তমানে সার্বিয়া যেতে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আপনার ৬ থেকে ৭ লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে। ক্ষেত্রবিশেষে এই টাকার মান বেড়ে যেতে পারে। তাই আপনি যদি সার্বিয়া ওয়ার্ড পারমিট ভিসায় ইউরোপ যেতে চান তাহলে এখনই আবেদন করুন।

সার্বিয়া ভিসা হতে কতদিন সময় লাগে 

সার্বিয়ায় ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করা হলে সকল কাগজ জমা দেওয়ার পর আপনার সাথে ভিডিও কলে সাক্ষাৎকার নিবে। তারপর আপনার টাকা জমা দেওয়া হলে তারা সমস্ত কাগজ যাচাই করা শুরু করবে এবং ওয়ার্ক পারমিট ভিসার প্রক্রিয়াটি দুই থেকে

তিন সপ্তাহের মধ্যে যার মাধ্যমে আবেদন করেছেন তার কাছে অথবা কুরিয়ারে পাঠিয়ে দিবে।

অতঃপর আপনি ওয়ার্ক পারমিট কাগজটি আপনার দেশের সার্বিয়া দূতাবাসে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে এবং জমা দিতে হবে। পরবর্তীতে সার্বিয়া দূতাবাস আপনাকে আশি থেকে ১৬০ দিনের মধ্যে একটি ডি টাইপ ভিসা প্রদান করবে। প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে আপনি এক বছরের জন্য ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেয়ে যাবেন এবং বছর শেষ হলে প্রতিবছর আপনার ভিসা রিনিউ করে নিতে হবে।

সার্বিয়া ভিসা চেক অনলাইন

কিভাবে অনলাইনে আপনি আপনার ভিসা চেক করবেন তা স্টেপ বাই স্টেপ আপনাকে দেখানো হল। সার্বিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা চেক করার জন্য আপনাকে প্রথমে অনলাইন ওয়েবসাইটে ঢুকে আপনার ভিসার নথিপত্র ও ওয়ার্ক পারমিট নাম্বার দিয়ে ভিসা চেক দিতে হবে।

সার্বিয়া থেকে ইতালি

সকলেরই একটি আগ্রহ থাকে ইউরোপ থেকে বা ইউরোপের কোন দেশ থেকে আরো উন্নত দেশে যাওয়ার সুযোগ আছে কিনা। আবার অনেকের ইতালি যাওয়ার ইচ্ছা থাকে। তাদের জন্য সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে কারণ সার্বিয়া থেকে ইতালির দূরত্ব কম এবং সেখান থেকে ইতালি যাওয়া অনেক সহজ।

যারা অনেক আগে থেকে প্রবাসী এবং সার্বিয়া গ্রিন কার্ড পেয়েছে তাদের ইতালি যেতে কোন ভিসার প্রয়োজন হয় না। যারা বর্তমানে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় সার্বিয়া যাচ্ছেন তারাও চার বছর পর খুব সহজে ইতালি এবং ইউরোপের অন্যান্য দেশে যেতে পারবেন।

যদি কেউ চার বছর হওয়ার আগেই ইতালি যেতে চান, তাদের জানা উচিত যে যদি ভিসা ছাড়াই কেউ ইতালিতে পৌঁছে যায় তাহলে সে আর কোনদিন সার্বিয়া আসতে পারবে না। আর ভিসা ছাড়া সে দেশে ধরা পড়লে আপনাকে জেল খাটতে হতে পারে এবং তারা দেশে পাঠিয়ে দিবে।

ইতিকথা : আপনি যদি আমাদের এই পোস্টটি পড়ে থাকেন এবং আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনি কোন ভাবে লাভবান হন তাহলে আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করবেন এবং যদি কোন প্রশ্ন থাকে বা আরো জানার জন্য কোন টপিক থাকে তাহলে আমাদের জানাবেন। ধন্যবাদ।

1 thought on “সার্বিয়া যাওয়ার উপায়, ভিসার জন্য আবেদন ও খরচ”

Leave a Reply